পারভেজ হোসাইন:
রামগঞ্জে ‘ইটভাটার মাটি নিতে খালে বাঁধ দেওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে তিনশত একর জমির ফসল’ শিরোনামে জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় খালের বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। খালের বাঁধ অপসারণের ফলে ঐ এলাকার শত শত স্থানীয় কৃষক উপকৃত হয়েছে বলে জানান।
জানা যায়, রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নে সুধারাম সরকারি খালের এক কিলোমিটার অংশে তিনটি বাঁধ নির্মাণ করায় মধ্য ভাদুর, উত্তর গ্রাম, পশ্চিম ভাদুর ও কেথুড়ি গ্রামের তিনশত একর কৃষি জমিতে চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। চলতি মাসে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘ ইটভাটার মাটি নিতে খালে বাঁধ দেওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে তিনশত একর জমির ফসল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদ প্রকাশের আজ (২৯ জানুয়ারি) সোমবার সকাল ১১টায় ভ্রাম্যমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রাসেল ইকবাল ও লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ নির্বাহী প্রকৌশলী গকুল চন্দ্র পাল সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে খালটি থেকে বাঁধ অপসারনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করেন। খালের বাঁধ অপসারণ করায় পানির প্রবাহ ফিরে আসায় স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
স্থানীয় কৃষক বিল্লাল হোসেন, সেলিম মিয়া জানান, আমরা খুশি বাঁধ অপসারণ করায়। আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। পানির অভাবে প্রতি বছর চাষাবাদ ব্যহত হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাবেদ হোসেন বলেন, আমার আমলে খালটিতে কেউ বাঁধ দিতে পারেনি। আগের চেয়ারম্যান থাকাকালীন অবস্থায় হয়েছে। আমি কৃষকদের স্বার্থে এটি অপসারণ করতে চেয়েছিলাম। সেজন্য এটি অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। অবশেষে খালের বাঁধ অপসারণ করা হলে ফসলি জমি রক্ষায় স্থানীয় কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী গকুল চন্দ্র পাল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্পত্তিতে অবৈধ নির্মাণসহ খালের পানি প্রবাহে কোনো বাধা সৃষ্টি হলে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমাদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল জানান, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা অনলাইন পত্রিকায় ‘খালের এক কিলোমিটারে তিনটি বাঁধ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। খবরটি দেখে পরের দিন পরিদর্শনে গেলাম। এরপর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে খালের বাঁধ অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এখন ফসলি জমি সুরক্ষিত হয়েছে এবং স্থানীয় কৃষকরা অনেক উপকৃত হয়েছেন। জনদুর্ভোগের খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকসহ সবাইকে ধন্যবাদ।